Distributed Ledger Technology (DLT) এর ধারণা

Distributed Ledger Technology (DLT) হলো একটি ডিজিটাল সিস্টেম যেখানে ডেটা বা লেনদেনের রেকর্ড বিতরণকৃতভাবে বিভিন্ন নোড বা কম্পিউটারে সংরক্ষিত হয়। এটি একটি কেন্দ্রীভূত সিস্টেমের বিপরীত যেখানে ডেটা একটি নির্দিষ্ট কেন্দ্র বা সার্ভারে সংরক্ষিত হয়। DLT একটি স্বচ্ছ, নিরাপদ, এবং পরিবর্তন-প্রতিরোধী ডেটাবেস তৈরি করে, যা বিতরণকৃত নেটওয়ার্কের মাধ্যমে পরিচালিত হয়।

Distributed Ledger Technology (DLT) এর মূল বৈশিষ্ট্য:

১. বিতরণকৃত ডেটাবেস:

DLT-এর মাধ্যমে ডেটা বা লেনদেনের রেকর্ড একাধিক কম্পিউটারে বা নোডে বিতরণ করা হয়। প্রতিটি নোড ডেটার পূর্ণ কপি ধারণ করে, ফলে কোনো একটি নোড নষ্ট হলেও বা আক্রমণ হলে অন্য নোডগুলো ডেটা সুরক্ষিত রাখে।

২. বিকেন্দ্রীকরণ (Decentralization):

DLT একটি বিকেন্দ্রীভূত ব্যবস্থার মাধ্যমে কাজ করে, যেখানে কোনো নির্দিষ্ট কেন্দ্রীয় প্রতিষ্ঠান বা কর্তৃপক্ষ নেই। নেটওয়ার্কের সমস্ত নোড ডেটা যাচাই ও সংরক্ষণে সমানভাবে অংশগ্রহণ করে, যা কেন্দ্রভিত্তিক নিয়ন্ত্রণ ছাড়াই একটি নির্ভরযোগ্য এবং স্বচ্ছ পরিবেশ তৈরি করে।

৩. স্বচ্ছতা (Transparency):

DLT-এর মাধ্যমে প্রতিটি লেনদেন বা ডেটা এন্ট্রি নেটওয়ার্কের সকল অংশগ্রহণকারীদের কাছে দৃশ্যমান থাকে। এটি ডেটা বা লেনদেনের ইতিহাস নিরীক্ষণ করা এবং যাচাই করা সহজ করে তোলে, যা একটি স্বচ্ছ এবং নির্ভরযোগ্য পরিবেশ তৈরি করে।

৪. নিরাপত্তা (Security):

DLT-তে ডেটা বা লেনদেন ক্রিপ্টোগ্রাফির মাধ্যমে সুরক্ষিত থাকে। প্রতিটি নোডের মধ্যে ডেটা এন্ট্রির সমন্বয় এবং যাচাইকরণ প্রক্রিয়া সুরক্ষিত থাকে এবং এটি অপরিবর্তনীয় (immutable) হওয়ায় একবার ডেটা রেকর্ড করা হলে তা পরিবর্তন করা খুবই কঠিন।

৫. কনসেনসাস মেকানিজম (Consensus Mechanism):

DLT সিস্টেমে একটি লেনদেন বা ডেটা এন্ট্রি স্বীকৃতি পাওয়ার জন্য নেটওয়ার্কের নোডগুলোকে সম্মত হতে হয়। বিভিন্ন কনসেনসাস পদ্ধতি, যেমন প্রুফ অফ ওয়ার্ক (Proof of Work), প্রুফ অফ স্টেক (Proof of Stake) ইত্যাদি DLT-তে ব্যবহৃত হয়, যা নোডগুলোর মধ্যে সমঝোতা স্থাপন করে এবং সিস্টেমের নিরাপত্তা নিশ্চিত করে।

DLT-এর উদাহরণ এবং প্রয়োগ:

DLT-এর সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য উদাহরণ হলো ব্লকচেইন। ব্লকচেইন হলো একটি DLT-এর নির্দিষ্ট রূপ, যেখানে ডেটা ব্লক আকারে রেকর্ড করা হয় এবং সেই ব্লকগুলো ক্রমান্বয়ে একটি চেইনে যুক্ত হয়। ব্লকচেইনের মাধ্যমে বিভিন্ন ক্রিপ্টোকারেন্সি, যেমন বিটকয়েন, ইথেরিয়াম, এবং অন্যান্য ডিজিটাল সম্পদ পরিচালিত হয়।

অন্যান্য DLT সিস্টেমগুলোর উদাহরণ:

  • হ্যাশগ্রাফ (Hashgraph): এটি ব্লকচেইনের তুলনায় দ্রুততর এবং অধিক কার্যকর একটি DLT পদ্ধতি।
  • IOTA (Internet of Things Applications): এটি IoT নেটওয়ার্কে ডেটা এবং মাইক্রো-পেমেন্ট পরিচালনার জন্য ব্যবহৃত হয়।

Distributed Ledger Technology (DLT) এর প্রয়োজনীয়তা:

১. স্বচ্ছ এবং নির্ভরযোগ্য লেনদেন:

DLT-এর মাধ্যমে লেনদেন বা ডেটা সংরক্ষণে স্বচ্ছতা বজায় থাকে এবং এতে কোনো একক প্রতিষ্ঠানের নিয়ন্ত্রণ না থাকায় এটি নির্ভরযোগ্য হয়।

২. নিরাপদ এবং অপরিবর্তনীয় ডেটা ম্যানেজমেন্ট:

DLT-তে ডেটা এনক্রিপ্টেড এবং বিভিন্ন নোডে সংরক্ষিত থাকে, ফলে এটি নিরাপদ এবং পরিবর্তন-প্রতিরোধী হয়। একবার ডেটা রেকর্ড করা হলে তা পরবর্তী সময়ে পরিবর্তন করা প্রায় অসম্ভব হয়ে যায়।

৩. কেন্দ্রীয় মধ্যস্থতাকারী ছাড়া কার্যকারিতা:

DLT সিস্টেমে কোনো মধ্যস্থতাকারী বা তৃতীয় পক্ষের প্রয়োজন হয় না, ফলে লেনদেন দ্রুত, নিরাপদ এবং কম খরচে সম্পন্ন করা যায়।

Content added By

আরও দেখুন...

Promotion